যশোর জেলার কেশবপুরের হরিহর নদের বুকে ভাসমান বেডে সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন একদল কৃষাণ-কৃষাণী। যাদের বসতভিটা ছাড়া জমি নেই এমন কৃষাণ-কৃষাণী ওই নদীর কুচুরি ও শেওলা দিয়ে ধাপ তৈরি করে তার ওপর বিভিন্ন ধরনের সবজি আবাদ করছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, হরিহর নদের বুকে তৈরি সবজি বেডে চাষ করা হচ্ছে লাল শাক, সবুজ শাক, পুঁইশাক, ডাটা শাক, পালং শাক, মিষ্টি কুমড়া, কচু শাক, পেঁয়াজ, রসুন এবং ভাসমান বেডের ওপর মাচা (বান) করে লাউ ও চাল কুমড়ার চাষ করা হয়েছে।বিনামূল্যে বীজ, কৃষি উপকরণ সরবরাহ এবং সবজি বেড পরিচর্যা করার করার জন্য ডোঙ্গা নৌকা দিয়েছে কৃষি বিভাগ।কৃষক নীল রতন বিশ্বাস জানান, সংসারের প্রয়োজন মিটিয়েও অতিরিক্ত সবজি বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে আরো জানা গেছে, হরিহর নদে কুচুরি ও শেওলায় পরিপূর্ণ হয়ে রয়েছে। ওই নদীর তীরবর্তী মধ্যকুল রাজবংশী পাড়ার জেলেরা নদীতে মাছ শিকার করতে না পেরে বেকার হয়ে পড়েন। এ সময় ওই নদীর কুচুরি ও শেওলাকে কাজে লাগিয়ে সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি বিভাগ একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ভাসমান বেডে সবজি চাষের ওপর মধ্যকুল রাজবংশী পাড়ার শতাধিক কৃষক-কৃষাণিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কৃষকরা নদীর কুচুরি ও শেওলা প্রথমে স্তুপ করে রাখেন।কুচুরি ও শেওলা পচে ধাপ তৈরি হলে তার ওপর সবজির বীজ বপণ করা হয়।মধ্যকূল এলাকায় ৩৬টি বেড তৈরি করে তার ওপর বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরো সবজি বেড তৈরি করার প্রস্তুতি চলছে।

রাজবংশী পাড়ার পারুল বিশ্বাস জানান, তিনি ওই নদীতে তিনটি ভাসমান বেড করেছেন। তাতে লাল শাক, সবুজ শাক, পুঁইশাক, ডাটা শাক এবং ভাসমান বেডের ওপর মাচা (বান) করে লাউ ও চাল কুমড়ার চাষ করেছেন। এতে তিনি সংসারের প্রয়োজন মিটিয়ে অতিরিক্ত সবজি বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

কেশবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার জানন, যাদের কৃষি জমি নেই তারা এ পদ্ধতিতে সবজি আবাদ করলে লাভবান হচ্ছেন। কোন প্রকার সার ও কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়াই এখানকার কৃষক-কৃষাণী বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করছেন।যা এলাকার মানুষ আগ্রহ সহকারে কিনে থাকেন

সুত্র: বাসস